খেরোখাতা: ডিসেম্বর ২১ ।।রহমান হেনরী

খেরোখাতা: ডিসেম্বর ২১ ।।রহমান হেনরী
●
.

বিগলিত বিনয়ের দিনে, অবনত হতে হতে তার মাথাকে মাটি স্পর্শ করতে বলো না; অহংকার কবিকেই মানায়— এভারেস্টশৃঙ্গস্পর্শী তার মস্তক থাকুক আসমান উচ্চতায়—

তার সাথে কথা বলে জগতের যাবতীয় ফুল, খরস্রোতা নদীর গর্জন, সমুদ্রের হাওয়া; কথা বলে প্রজাপতি, পাখিদের বিপুল পিপাসা, আঘাত হানার আগে সবগুলো ভূমিকম্প, ঝড়, জলোচ্ছ্বাস; কথা বলে বনে বনে বাঘের প্রতীক্ষা নিয়ে বেড়ে ওঠা হরিণশিশুরা— সার্বভৌম নটিনীর মত ওই বহুগামী চাঁদ যৌবনের সংগুপ্ত কুয়া খুলে, অক্ষত জ্যোৎস্নার স্বাদ কবিকেই দিয়েছে কেবল; অন্যেরা, কদাচিৎ টের পেতে পারে: ভার্জিন জ্যোৎস্নার ঘ্রাণ— নির্জন নিস্তব্ধ তার লেখার টেবিলে, পৃথিবীর সমস্ত সুন্দর এসে, কবিকেই কুর্নিশ জানায়— বিষণ্ন অন্ধকার পর্দার ওপরে, সুন্দরের আলোক-ঝরনা ফুটিয়ে, কবিই বলেছে: দেখো, এই হলো আস্বাদনযোগ্য সুন্দর! সুন্দরের জন্মকথা এই-ই;

নিখিল বিশ্বের সমস্ত শহরের গল্প হাস্যকর; এবং একই মাপে তৈরি কোনও ঝলমলে শার্টের সমান— পানশালার হট্টোগোল, জুয়াবোর্ডের উত্তেজনা, সভ্যতার সমান আয়তনের এই গণিকালয় ও তার যৌনতার ভেতরে, ক্রমশই জমে উঠছে তর্ক— ওইসব তর্কের পাশ থেকে উঠে এসে, অন্ধকারের তুমুল বর্ষণের মধ্যে হেঁটে যাক কবি— পথরোধ করো না তার; তাকে যেতে দাও— ফুল্লনগ্নিকার নরকের ওমে তার চিতাবহ্নিমান— অফুরন্ত দহনের গাভীটি দোহন শেষে, সে আনুক ফেনাময়-উষ্ণ-দুধের মত অমৃতের দিন—

তর্ক করো না, কবিকে মর্যাদা দাও— কবির মর্যাদা হোক সম্রাটেরও তীব্র অহংকার—
.
●
.
#রহমানহেনরী; #RahmanHenry
.